আমাদের শরীরের জন্য মধুর উপকারিতা এতটাই বেশি যে- কুরআন এবং হাদীসেও মধুর অনেক গুনাগুন সম্পর্কে বলা হয়েছে। পরবর্তিকালে বিজ্ঞানীদের দ্বারা তা সত্য বলে প্রমানিত হয়েছে। অথচ আমাদের অনেকের কাছেই তা অজানা বলে মধুর উপকারিতা আমরা কাজে লাগাতে পারি না। আসুন আজ দেখে নেই মধুর উপকারিতা সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসে কি বলা হয়েছেঃ
কুরআন ও হাদীস অনুযায়ী মধুর উপকারিতা
আপনার পালনকর্তা মৌমাছিকে আদেশ দিলেনঃ পাহাড়ে, গাছে এবং উঁচু চালে গৃহ তৈরী কর, এরপর সর্বপ্রকার ফল থেকে ভক্ষণ কর এবং আপন পালনকর্তার উম্মুক্ত পথ সমূহে চলমান হও। তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙে পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্যে রয়েছে রোগের প্রতিকার। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে। – সূরা আন-নাহল(১৬), আয়াতঃ ৬৮-৬৯
প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘মধুতে আরোগ্য নিহিত আছে।’ (সহীহ বুখারি: ৫২৪৮)।
আয়েশা (রা.) বলেন, প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে মধু ও মিষ্টান্ন খুব প্রিয় ছিল। (সহীহ বুখারি: ৫২৫০)।
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতি মাসে তিন দিন সকালে মধু চেটে খাবে, তার বড় ধরনের কোনো রোগ হবে না।’ (ইবনে মাজাহ : ৩৪৪১)।
আয়্যাশ ইবন ওয়ালীদ (রহঃ) আবূ সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট এসে বললঃ আমার ভাইয়ের পেটে অসুখ হয়েছে। তখন নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তাকে মধূ পান করাও। এরপর লোকটি দ্বিতীয়বার আসলে তিনি বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। সে তৃতীয়বার আসলে তিনি বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। এরপর লোকটি পুনরায় এসে বললঃ আমি অনুরূপই করেছি। তখন নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ সত্য বলেছেন, কিন্তু তোমার ভাইয়ের পেট অসত্য বলছে। তাকে মধু পান করাও। সে তাকে মধু পান করাল। এবার সে আরোগ্য লাভ করল। – সহীহ বুখারি অধ্যায়ঃ চিকিৎসা হাদিস নাম্বারঃ ৫২৮২
এইতো গেল কুরআন ও হাদীসের কথা। বিজ্ঞানও মধুর অনেক উপকারিতার সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। মধুর এইসব গুলাবলি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার জন্য আমাদের এই পোষ্টতি পড়ুনঃ মধুর গুনাগুণ
কীভাবে খাঁটি মধু চিনবেন?
মধুর অনেক উপকারিতা সম্পর্কে তো জানলাম। কিন্তু সব ধরণের মধু কি আমাদের উপকারে লাগবে? অবশ্যই নয়! বাজারে যে সমস্ত ভেজালযুক্ত মধু পাওয়া যায়, তা আমাদের উপকারের চেয়ে অপকার বেশি করবে। শুধু মাত্র মৌচাক থেকে কেটে নেওয়া টাটকা মধু খাওয়ার জন্য আমাদের উপকারে আসতে সক্ষম।
আলহামদুলিল্লাহ্, বাজারের অনেক অনেক মধুর ভীড়ে আসল-নকল যখন চেনা দায় তখন Hello Fresh পরিবার চেষ্টা করছে আসল স্বাদের, ভেজালমুক্ত মধু সরবরাহ করতে। বিশ্বস্ত মৌয়াল দ্বারা সংগ্রহ করা এ মধু আমরা নিজেরা ও যারা আসল মধু চেনেন সেই সকল মানুষদের খাইয়ে, তাঁদের পরামর্শে আপনাদের জন্য ঢাকায় নিয়ে এসেছি । আল্লাহ সুবহানু তা’আলার এই বিস্ময়কর সৃষ্টি যেমন অনেক রোগের শিফা তেমনি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর খুব পছন্দনীয় একটি খাবারও বটে। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর এই সুন্নাহর জাগরণ হোক আসল মধুর দ্বারাই আমাদের লক্ষ্য এটাই। আল্লাহ তা’আলা যেন আমাদের ভাইদের এই প্রচেষ্টাকে কবুল করেন। আমীন।
মধুতে রয়েছে ৪৫টিরও বেশি খাদ্যগুণ। তার মধ্যে কয়েকটি হল
১। মধুতে থাকে ২৫ থেকে ৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ,
২। ৩৪ থেকে ৪৩ শতাংশ ফ্রুক্টোজ,
৩। ০.৫ থেকে ৩.০ শতাংশ সুক্রোজ
৪। ৫ থেকে ১২ শতাংশ মন্টোজ
৫। ২২ শতাংশ অ্যামাইনো অ্যাসিড
৬। ২৮ শতাংশ খনিজ লবণ
৭। ১১ শতাংশ এনকাইম
৮। ১০০ গ্রাম মধুতে থাকে ২৮৮ ক্যালরি।
৯। ভিটামিন বি১
১০। ভিটামিন বি২
১১। ভিটামিন বি৩
১২। ভিটামিন বি৫
১৩। ভিটামিন বি৬
১৪। আয়োডিন
১৫। জিংক
১৬। কপার
১৭। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান
১৮। অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান
এতে চর্বি ও প্রোটিন নেই।
এই তো গেল মধুর খাদ্যগুণ। এবার দেখে নেওয়া যাক মধু নিয়মিত খেলে কী কী উপকারিতা লাভ করা যায়?
১। রোগ প্রতিরোধশক্তি বাড়ায় – প্রথমেই যে কথাটি বলার তা হল মধু শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়। শরীরের ভেতরে বাইরে কোনো রকম ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে প্রতিরোধ করে। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান প্রতিরোধকারী শক্তি গড়ে তোলে, যে কোনো রকম সংক্রমণ থেকে দেহকে রক্ষা করে।
পড়তে পারেন – কেন খাবেন পালং শাক? ৩০টি উপকারিতা
২। ওজন কমাতে – নিয়মিত মধু খেলে পাকস্থলীতে বাড়তি গ্লুকোজ তৈরি হয়। এই গ্লুকোজ মস্তিষ্কের সুগার লেভেল বাড়িয়ে দেয়। তার ফলে মেদ কমানোর হরমোন নিঃসরণের জন্য বেশি মাত্রায় চাপ সৃষ্টি করে। ফলে মেদ কমে যায়।
৩। অনিদ্রায় – অনিদ্রার জন্য খুব ভালো ওষুধ হল মধু। রাতে নিয়ম করে মধু খেলে গভীর ঘুম হয়।
৪। কোষ্ঠকাঠিন্য – মধুতে রয়েছে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স। এই ভিটামিন বি কমপ্লেক্স কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
৫। ডায়রিয়া – মধু ডায়রিয়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তাই যাঁদের আমাশা, ডায়রিয়া বা পেট খারাপের প্রবণতা আছে তাঁরা নিয়মিত মধু সেবন করতে পারেন।
৬। অম্বলের সমস্যা – খাঁটি মধু যদি ভোরবেলা খাওয়া যায় তা হলে অম্বলের সমস্যা, মুখে টক ভাব দূর করে।
৭। হজমের সমস্যা – মধুর মধ্যে থাকা উপাদানগুলি হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে খাবার খাওয়ার পর বদ হজম, গলা বুক জ্বালা ইত্যাদি সমস্যা দূর হয়।
৮। পাকস্থলীর সুস্থতায় – মধু খেলে পাকস্থলীর কাজ জোরালো হয়। কারণ এটি হজমে সাহায্য করে। এর ব্যবহার হাইড্রোক্রলিক অ্যসিড ক্ষরণ কমিয়ে দেয়। তার ফলে পাকস্থলীর কাজ ভালো হয়।
৯। অরুচি – অনেকেই বেশি খেতে পারেন না। একটু খেয়েই হাঁপিয়ে ওঠেন। বা খাবারে ইচ্ছাটাই থাকে না। অরুচিতে ভোগেন। সে ক্ষেত্রে মধু খেলে খাবরে অরুচি কমে। খাবার চাহিদা বাড়ে।
১০। বমিভাব – অনেকেই আছেন খাবার দেখলেই বা সামান্য খেলেই বমি বমি ভাব আসে। সেই সমস্যার সমাধানও করে মধু। বমিভাব কনায় মধু।
১১। বুদ্ধি বাড়ে – মধু যে শুধু আপনার কায়িক শক্তি বাড়ায়, তা নয়। ঘুমানোর আগে এক চামচ মধু খেলে তা মস্তিষ্কের কাজ সঠিক ভাবে চালাতে সাহায্য করে। তার ফলে মস্তিষ্কের কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তথা বুদ্ধির জোর বাড়ে।
ডেলিভারি চার্জ: ঢাকার মধ্যে ৩৯ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৯৯ টাকা